মালয়েশিয়া যাওয়া হলো না শিল্পপতি কন্যা রিয়ার

0
99

জহিরুল ইসলাম জহির।। নারায়নগঞ্জের ফতুল্লার ‘কে আলী নিটওয়ার’ এর মালিক কোরবান আলীর তিন মেয়ে। কোন ছেলে নেই। বড় মেয়ে ফৌজিয়া আফরিন রিয়া মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ শেষ পর্বে পড়তেন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি রিয়া দেশে আসেন। ২রা মার্চ (শনিবার) পিতার সাথে মালয়েশিয়ায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। সেকারনে ট্রিট দিতে নিজের আপন বোন সাদিয়া আফরিন আলিসা, খালাত বোন নুসরাত জাহান নিমু, প্রতিবেশি আন্টি নাজিয়া আক্তার ও আন্টির দুই শিশু সন্তান আরিহান (৮), আদিয়ান (৬)কে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার বেইলি রোডের কাচ্ছি ভাই রেস্টুরেন্ট ভবনের ৫ম তলার ‘পিজ্জা ইন’-এ যান।
খাওয়ার সময়ে হঠাৎ ভবনটিতে আগুন লাগায় তারা রেস্টুরেন্ট থেকে বের হতে পারেননি। ধোঁয়ায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে দুই সহোদর বোনসহ ৬জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। নিহত আলিসা ভিকারননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণিতে এবং নিমু ঢাকা সিটি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত। এসএসসি পরীক্ষা থাকায় রিয়ার অন্য বোন সাবিয়া আফরিন রিফা তাদের সাথে রেস্টুরেন্টে যায়নি।

শুক্রবার সকাল ১১টায় রিয়া ও আলিসার মরদেহ দুইটি অ্যাম্বুলেন্সে করে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের চরবাড়িয়া গ্রামস্থ নিজ বাড়িতে আসেন শিল্পপতি কোরবান আলী। নিহতদের একনজর দেখতে সহ¯্রাধিক নারীর ভিড় জমে বাড়িতে। গোসল শেষে মরদেহ নারীদের ঘরোয়াভাবে দেখানো হয়।


খবর পেয়ে বাড়িতে ছুটে আসেন শিল্পপতি হাজী শাহজাহান, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা: মোতাহের হোসেন জুয়েল, পুলিশের এআইজি মহি উদ্দিন ফারুকী কাজল, এমপি আ.হ.ম মুস্তফা কামালের পিএস কেএম সিংহ রতন, এমপি শামীম ওসমান এর পিএস হাফেজ আহমেদ সোহেলসহ কোরবান আলীর ঘনিষ্টজনরা। বিকাল ৪টায় বাড়ির সামনের মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি দুই বোনকে দাফন করা হয়।

রিয়ার চাচা লোকমান হোসেন বলেন, আমার ভাইয়ের কোন ছেলে নেই। তিন মেয়ে। অগ্নিকান্ডে দুই মেয়ে মারা গেছে। আগুনে তাদের শরীর পুড়েনি। শুধু ধোঁয়ায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। ওই রেস্টুরেন্টে তারা ৬জন একসাথে খেতে গিয়েছিল। কেউ বেঁচে ফিরেনি।

নিহত রিয়া ও আলিসার পিতা শিল্পপতি কোরবান আলী বলেন, ‘আমার দুই সন্তান দুনিয়া থেকে চলে গেছে। এ রকম করুণ মর্মান্তিক মৃত্যু আল্লাহ কী কারণে দিয়েছেন সেটা আল্লাহই ভালো জানেন। শনিবার রিয়াকে নিয়ে আমার মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল।’

এদিকে অগ্নিকান্ডে নিহত ৬জনের মধ্যে রিয়ার খালাত বোন নুসরাত জাহান নিমু কে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার কালিরবাজার ইউনিয়নের হাতিগাড়া গ্রামে শুক্রবার দুপুর ১২টায় জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিমুর বাবা আবদুল কুদ্দুস রিয়ার বাবার মালিকানাধীন কে আলী নিটওয়ারে চাকরি করেন। আর রিয়ার আন্টি নাজিয়া আক্তার এবং তার শিশু সন্তান আরিহান (৮) ও আদিয়ান (৬) কে বাদ জুমা নোয়াখালী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড মাইজদীর আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাদরাসায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here