স্টাফ রিপোর্টার: লালমাইয়ে কভিড-১৯ ও কঠোর লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্থ ১৭ হাজার পরিবারকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা দিচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন। লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার অজিত দেব’র দিকনির্দেশনায় ৯টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার ও মেম্বাররা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিয়েই এই সহায়তা কার্যক্রম করছেন।
গত ৭ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত এই উপজেলায় ২ হাজার ৫০টি অসহায় ও দুস্থ পরিবারে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে খাদ্য সামগ্রী (চাল, ডাল, লবণ, তেল, আলু ইত্যাদি) পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সুবিধাপ্রাপ্ত পরিবারগুলোর মধ্যে পরিবহন শ্রমিক, সেলুনকর্মী ও দিনমজুররাও রয়েছেন। নগদ ৫শ টাকা করে আর্থিক সহায়তার আওতায় উপজেলার আরো ৩ হাজার ৫শ টি পরিবারকে সহায়তা করা হয়েছে।
একই সময়ে ভিজিএফ এর আওতায় ১ হাজার ৫শ ৫৫টি পরিবারে ১০ কেজি চাল বিতরণ করা হয়েছে। ঈদ উল আযহা উপলক্ষে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে মোট ৯ হাজার ৯শ ৫১টি পরিবারে ভিজিএফ এর চাল বিতরণ করার কথা রয়েছে। গত ১৫ জুলাই থেকে এই চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বাররা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ইউপি চেয়ারম্যানদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। তিনি প্রতিদিনই ৩/৪টি স্পটে চাল বিতরণ কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণ করছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে উপজেলা প্রশাসনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ১শটি পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে ৩৩৩ বা ইউএনও লালমাই’র সরকারি নাম্বারে কল করেও অনক দুস্থ ও অসহায়রা লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে খাদ্য সহায়তা নিচ্ছেন। গত কয়েক দিনে উপজেলা থেকে সরাসরি প্রায় শতাধিক ব্যক্তি খাদ্য সহায়তা নিয়েছেন।
উল্লেখ্য ১২টি শর্তের মধ্যে কমপক্ষে চারটি শর্ত পূরণ হওয়া ব্যক্তি বা পরিবারকে দুস্থ বলে গণ্য করে সহায়তা করা হয়। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে যাদের ভিটাবাড়ি ছাড়া কোনো জমি নেই, যে পরিবার দিনমজুরের আয়ের ওপর নির্ভরশীল, যে পরিবার মহিলা শ্রমিকের আয় বা ভিক্ষাবৃত্তির ওপর নির্ভরশীল, যে পরিবারে উপার্জনক্ষম পূর্ণবয়স্ক কোনো পুরুষ সদস্য নেই, যে পরিবারে স্কুলগামী শিশুকে উপার্জনের জন্য কাজ করতে হয়, যে পরিবারে উপার্জনশীল কোনো সম্পদ নেই, যে পরিবারের প্রধান স্বামী পরিত্যক্তা, যে পরিবারের প্রধান অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা, যে পরিবারের প্রধান অসচ্ছল ও অক্ষম প্রতিবন্ধী, যে পরিবার কোনো ক্ষুদ্রঋণ পায়নি, যে পরিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে চরম খাদ্য বা অর্থসংকটে পড়েছে এবং যে পরিবারের সদস্যরা বছরের বেশির ভাগ সময় দু-বেলা খাবার পায় না।
লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার অজিত দেব বলেন, লকডাউন ও ঈদ উল আযহা উপলক্ষে লালমাই উপজেলার ১৭ সহ¯্রাধিক দুস্থ ও অসহায় মানুষকে সরকারি সহায়তা করা হচ্ছে। করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম চলমান থাকবে।