স্টাফ রিপোর্টার: কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৪নং ‘সদস্য’ (লালমাই উপজেলা) পদে আওয়ামীলীগের হাফ ডজন সম্ভাব্য প্রার্থী প্রচারনায় থাকলেও দলীয় সমর্থন পাওয়ার দৌড়ে আলোচনায় রয়েছেন ৩ (তিন) আওয়ামীলীগ নেতা। তারা হলেন, লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী আমির হোসেন, লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন এবং মো: আমির হোসেন মেম্বার।
ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের বড় চলুন্ডা গ্রামের কৃতি সন্তান হাজী আমির হোসেন ছাত্রলীগের রাজনীতি শেষ করে ১৯৯৮ সালে বৃহত্তর ভুলইন ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে তিনি বৃহত্তর ভুলইন ইউনিয়ন উত্তরাঞ্চল যুবলীগের সভাপতি হন। ২০১০ সালে তিনি ভুলইন উত্তর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হন। এরপর তিনি ২০১৫ সালে ভুলইন উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও ২০১৯ সালে লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন। হাজী আমির হোসেন এই পর্যন্ত তিন বার ভুলইন উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হয়েছেন। তৃণমূলে তার যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। জেলা পরিষদের সদস্য পদে সরাসরি প্রার্থীতা ঘোষনা না করলেও উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগের একটি অংশ হাজী আমির হোসেন কে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়।
বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের বরল (জামুয়ার পাড়) গ্রামের কৃতি সন্তান মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন ১৯৯৩ সালে বৃহত্তর বাগমারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ৩নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ১৯৯৫ সালে বৃহত্তর বাগমারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের শিক্ষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক, ১৯৯৮ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক ও ২০০৪ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগেরও বিভিন্œ দায়িত্বে ছিলেন। গত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তিনি বাগমারায় হামলার শিকার হয়েছেন। ২০১৯ সালে তিনি লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মনোনীত হন। তিনি ঢাকাস্থ লালমাই উপজেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তার বড় ভাই মো: বাবুল হোসেন লালমাই উপজেলা মৎস্যজীবিলীগের আহবায়ক। ছোট ভাই মো: আয়াত উল্যাহ লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে তার যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। জেলা পরিষদ সদস্য পদে তিনি সরাসরি প্রার্থীতা ঘোষনা করে মাঠে রয়েছেন। তার পক্ষে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগের একটি বড় অংশ প্রচারনা করছেন।
ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের দক্ষিণ হাজাতিয়া গ্রামের কৃতি সন্তান মো: আমির হোসেন লালমাই সরকারি কলেজে পড়াকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ভুলইন উত্তর ইউনয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল মতিন মোল্লা যখন বৃহত্তর ভুলইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন তখন মো: আমির হোসেন ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও ভুলইন উত্তর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। জেলা পরিষদের সদস্য পদে তিনি প্রার্থীতা ঘোষনা করে মাঠে রয়েছেন। ভুলইন উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ উপজেলা নেতাদের একটি অংশ তার পক্ষে রয়েছেন।
জেলা পরিষদ সদস্য পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সোস্যাল মিডিয়ায় আরো প্রচারনায় রয়েছেন বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার ইমাম হোসেন, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব সুমন রায় চৌধুরী, যুবলীগ নেতা এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম ও বেলঘর সুরুজ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আবদুল আউয়াল।
উল্লেখ্য আগামী ১৭ অক্টোবর কুমিল্লাসহ দেশের ৬১টি জেলা পরিষদের নির্বাচন ইভিএমে অনুষ্ঠিত হবে। গত ২৪ আগস্ট এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর। জেলা পরিষদ নির্বাচনে লালমাই উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছেন ১২০জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯২জন ও নারী ভোটার ২৮জন।