পদ থেকে অব্যাহতি নিলেও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পাশে থাকবো-কেএম সিংহ রতন

364

রিয়াজ উদ্দিন ||  রাষ্ট্রীয় দায়িত্বসহ কুমিল্লা-১০ আসনের তিনটি উপজেলায় অর্থমন্ত্রীর এপিএস হিসেবে ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন কেএম সিংহ রতন। ১৮ সেপ্টেম্বর তার পদত্যাগপত্র গ্রহন করে উপজেলা আওয়ামীলীগের ৩নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান ভুঁইয়াকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আ.হ.ম মুস্তফা কামাল এমপি ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক এমপি।
২৭ সেপ্টেম্বর বিকালে উপজেলার আলীশ্বর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের আলোচনা সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের নিকট বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক কেএম সিংহ রতন। বিদায়ী বক্তব্যে তিনি বলেন, দায়িত্বের কারনে তৃনমূলের নেতাকর্মীদের খুব কাছ থেকে দেখা হয়েছে। অনেক কথা হয়েছে। তাদের মনের কথা আমি শুনেছি। তৃনমূলের চাওয়া পাওয়া খুব বেশি কিছু নয়। তারা ডাল ভাত খেয়েই বাঁচতে চায়। তারা শুধু শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চায়। বিপদে নেতাদের পাশে চায়। আমি আনুষ্ঠানিকভাবে কথা দিলাম, দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি নিলেও আমি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পাশে থাকবো। লালমাই উপজেলাবাসীর জন্য আমার দরজা খোলা থাকবে সবসময়।


উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আয়াতুল্লাহ’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন লালমাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক, সিনিয়র আওয়ামীলীগ নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান ভুঁইয়া, সহ-সভাপতি আবদুল মতিন মোল্লা, ইব্রাহিম মজুমদার, ২নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আমির হোসেন, আবদুল মালেক, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আবু তাহের রনি, বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম সওদাগর, উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য বিল্লাল হোসেন, বেলঘর উত্তরের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের মজুমদার, পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাষ্টার হারুনুর রশিদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আবুল হাসেম মজুমদার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও পেরুল উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: অহিদুর রহমান মাছুম প্রমুখ।


সভায় উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটি ও উপদেষ্টা কমিটির প্রায় সকলেই উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আবদুল মোতালেব, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আকতার হোসেন পারভেজ, যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান ভ্ট্টুু, প্রভাষক আমান উল্যাহ আমান, বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নাছির মির্জা, বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল হান্নান মিয়াজী ও বেলঘর দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল আউয়াল মিনহাজ মিয়াজীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য কেএম সিংহ রতন কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট’র ছাত্র থাকাকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেন। সেই সুবাদে বৌদ্ধদের ধর্মগুরু জ্যোতিপাল মহাথেরোর কাছেও তিনি আদরের ছিলেন। আর জ্যোতিপাল মহাথেরোর সেই আদরের কেএম সিংহ রতনকেই নিজের পিএস হিসেবে কাজে লাগান তৎকালীন এই অঞ্চলের এমপি মরহুম অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদার। দীর্ঘ সময়ে তাঁর সাথে চলতে গিয়ে দক্ষিণ কুমিল্লার অলি গলি মুখস্ত হয়ে যায় কেএম সিংহ রতনের। এমপির পাশাপাশি তিনিও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। এজন্যই কালাম মজুমদারের মৃত্যুর পর বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল এমপিও কেএম সিংহ রতনকে এপিএস হিসেবে সাথেই রাখেন। বর্তমান অর্থমন্ত্রীর সাথে তিনি দীর্ঘ ২৫বছর সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বলতে গেলে, এই অঞ্চলে তার কোন শত্রু নেই। কারন তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না। যে কেউ কোন সমস্যা নিয়ে তার কাছে গেলে যথাসম্ভব সমাধানের চেষ্টা করেন। তৃণমূলের দাবী দাওয়া তিনিই মূলত আদায় করে দেন। এজনই তৃণমূলের নেতাকর্মীদের প্রস্তাব সমর্থনের ভিত্তিতে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর বাগমারা বাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে সাধারণ সভায় আবদুল হামিদ কে সভাপতি ও কেএম সিংহ রতন কে সাধারণ সম্পাদক করে লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রথম কার্যকরি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সফলভাবে এক বছর পূর্ণও করেছে। শুধুমাত্র ব্যস্ততার কারনে একজন সফল সাধারণ সম্পাদকের অব্যাহিত কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।