দৃষ্টিনন্দন আলী শহর রেলস্টেশন 

170

জহিরুল ইসলাম জহির।। আলী শহর। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের কুমিল্লার লালমাই উপজেলার একমাত্র রেলওয়ে স্টেশন। ১৮৯৫ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জনমুখে প্রচার রয়েছে, স্টেশন অঞ্চলের মৌজার নাম আলীশ্বর হওয়া সত্তেও একদিন এই অঞ্চল গ্রাম থেকে শহরে রুপান্তর হবে মনে করেই স্টেশনের নামকরণ করা হয়েছিল আলী শহর। স্টেশন কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এই অঞ্চলের বাণিজ্য। প্রত্যন্ত এই অঞ্চলের মানুষের সাথে শহরের যোগাযোগও শুরু হয়েছিল। ট্রেনে চড়েই কৃষকরা গ্রামে ফলানো সবজি কুমিল্লা নিয়ে বিক্রি করতো। আবার ট্রেনেই বাড়ী ফিরে আসতো। জনবল সংকটের কারনে এক যুগ ধরে স্টেশনটি বন্ধ রয়েছে। বন্ধ থাকায় স্টেশনের আশে পাশে বনাঞ্চল গড়ে উঠেছিল। কয়েক বছর আগে পরিত্যক্ত স্টেশন মাঠে স্থানীয় কৃষকদের ধান মাড়াই করতেও দেখা গেছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল এমপির প্রচেষ্টায় রেলপথ মন্ত্রনালয় ২০১৮ সালে স্টেশনটিকে নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ নেয়। ২০১৯ সাল থেকে আধুনিক মডেলে স্টেশনের নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স। চলতি বছরের জুনে নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। এখন চলছে শুধু সাজ সজ্জার কাজ। নতুন স্টেশনে ফুট ওভার ব্রীজ, বিশ্রামাগার, টিকেট কাউন্টারসহ সকল সুবিধা রয়েছে। দৃষ্টিনন্দন স্টেশনটি দেখতে প্রতিদিন বিকালে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন আলী শহরে।

সম্প্রতি লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার অজিত দেব উপজেলার কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে এক বিকালে আলী শহর স্টেশন পরিদর্শন করেছেন। প্রায় এক ঘন্টা সময় ধরে তারা স্টেশনে ঘুরেন। কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাকে স্টেশনের বিভিন্ন পয়েন্টে সেলফি তুলে সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতেও দেখা গেছে।

১৬ জুলাই বিকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন গ্রাম থেকে নারী পুরুষরা স্টেশনে ঘুরতে এসেছেন। অনেকে দৃষ্টিনন্দন স্টেশনের সাথে সেলফি তুলছেন। কথা হয় স্টেশনে ঘুরতে আসা কলেজ পড়ুয়া বিউটির সাথে। তিনি বলেন, স্টেশনের কয়েকটি ছবি ফেসবুকে দেখেছিলাম। তাই লোভ সামলাতে পারিনি। চাচাতো ভাইকে সাথে নিয়ে চলে এসেছি। স্টেশনটি অনেক সুন্দর হয়েছে। সরাসরি দেখলে উন্নত বিশ্বের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই।

স্টেশন এলাকার বাসিন্দা ছাত্রলীগ নেতা শিশুল বড়ুয়া বলেন, দৃষ্টিনন্দন রেলস্টেশন পেয়ে আমরা আনন্দিত। মাননীয় অর্থমন্ত্রী ও রেলপথ মন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তবে ট্রেন না থামলে উন্নত স্টেশন জনসাধারণের কোনো উপকারে আসবে না।

স্টেশন এলাকার বাসিন্দা ও স্কুল শিক্ষক আবু ইউছুফ বলেন, এক যুগ আগেও আলী শহর থেকে লোকাল ট্রেনে কুমিল্লা শহরে গেছি। এখন স্টেশন উন্নত হয়েছে। আমারা আশা করছি, আন্তঃনগরসহ সকল যাত্রীবাহী ট্রেনের যাত্রাবিরতি হবে আলী শহরে।