কল পেলেই ত্রাণ নিয়ে ছুটে যান ‘ওরা ’

1668

জহিরুল ইসলাম জহির ।।  করোনা ভাইরাসে জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ, অভাব-অনটন ।  হতদরিদ্রদের ঘরে ঘরে খাদ্য সংকট।  সারাদেশের মত লালমাইয়েও একই অবস্থা বিরাজমান।  হতদরিদ্রদের এই খাদ্য সংকট মেটাতে এ উপজেলায় সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে চলছে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ।

সরকারিভাবে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এই পর্যন্ত উপজেলায় প্রায় ১২ সহস্রাধিক পরিবারে খাদ্য সহায়তা পৌঁছেছে । অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল এমপির ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৩ হাজার পরিবারে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে ।  থানা পুলিশ, উপজেলা আওয়ামীলীগ ও ব্যক্তি উদ্যোগে বিচ্ছিন্নভাবে খাদ্য পৌঁছেছে প্রায় ১০ সহস্রাধিক পরিবারে। মধ্যবিত্তদের সহায়তায় লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেএম ইয়াসির আরফাত হটলাইন চালু করেছেন । খাদ্য সংকটে পড়া যে কেউ এই হটলাইন নাম্বারে এসএমএস করে খাদ্য সহায়তা নিতে পারছেন।

এসবের মধ্যেই একজন তরুণ রাজনৈতিক নেতা, একজন ছাত্রনেতা ও একজন সমাজসেবকের নিরবে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম এলাকায় বেশ প্রশংসিত হয়েছে । হতদরিদ্র বা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে কল পেলেই একাকী ত্রাণ নিয়ে ছুটে যান ওরা।

তাদের একজন মোস্তাফিজুর রহমান ডালিম । উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আওয়ামী পরিবারের সন্তান ডালিম তরুণদের মাঝে বেশ জনপ্রিয় । ইউনিয়ন যুবলীগ-ছাত্রলীগেও রয়েছে তার ভাল অবস্থান। জনসেবায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের অন্য নেতাদের তুলনায় তিনি রয়েছেন এগিয়ে । করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর থেকেই তিনি নিজের সাধ্য অনুযায়ী হতদরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন । নিজের পরিবারসহ কয়েকজনের সহায়তায় ইউনিয়নের সহস্রাধিক পরিবারে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন । বিশেষ করে মধ্যবিত্ত বা আওয়ামী পরিবারের কেউ খাদ্য সংকটে পড়ে কল করলে তিনি নিজেই গোপনে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে হাজির হন সেই পরিবারে।

আরেকজন ছাত্রনেতা ফয়সাল মাহমুদ । সে ছোট শরীফপুর ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক । নিজে বিত্তশালী পরিবারের সন্তান না হয়েও কলেজের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তায় তৈরি করেছে করোনা ফান্ড । এলাকার বড় ভাইদের সহায়তায় এই পর্যন্ত কলেজের ৪১ জন শিক্ষার্থীর বাড়ীতে গোপনে পৌঁছে দিয়েছে খাদ্য সামগ্রী । ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কলেজের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ‘ঈদ উপহার’ পাঠাতেও সে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

অন্যজন মোঃ ইয়াছিন আরাফাত রনি । পেরুল উত্তরের সামাজিক সংগঠন কাঁকসার নবজাগরণ সংঘ’র সভাপতি। ছাত্রজীবন থেকেই সে সমাজসেবায় জড়িয়ে পড়ে । নিজের প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের মাধ্যমে এলাকায় অনেক সামাজিক ও মানবিক কাজ করেছেন। নিজের এলাকায় শিক্ষা কার্যক্রমেও রয়েছে তার অবদান। করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্থ যেসব হতদরিদ্র পরিবার সরকারি বেসরকারি সহায়তা পায়নি সেসব পরিবারে সে সংগঠনের পক্ষে গোপনে খাদ্য সহায়তা করে । এই পর্যন্ত এমন ১১৯টি পরিবারে সে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে।