অভিভাবকহীন লালমাই উপজেলা ছাত্রলীগ

তৃণমূলের দাবি দ্রুত নতুন কমিটি

497

স্টাফ রিপোর্টার  ।।  কমিটি ছাড়াই চলছে কুমিল্লার লালমাই উপজেলা ছাত্রলীগ। ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ভাতৃপ্রতিম এই সংগঠনটির লালমাই উপজেলা শাখা যেন অভিভাবহীন। কবে নাগাদ কমিটি গঠন হবে সেটিও পরিষ্কার নয়। সংগঠনকে গতিশীল করতে অবিলম্বে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ সালের শুরুর দিকে নূরজাহান হোটেলে অনুষ্ঠিত এক সভায় বৃহত্তর বাগমারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সফল সভাপতি মো: আয়াত উল্যাহ কে আহবায়ক, আকতার হোসেন পারভেজ, কামরুল হাসান ভুট্টুকে যুগ্ম আহবায়ক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট সদর দক্ষিণ উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি এক মাস মেয়াদে অনুমোদন করেন জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি আবু তৈয়ব অপি ও সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন রুবেল। সেই কমিটির দায়িত্ব ছিল একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করা। অজ্ঞাত কারনে তারা উপজেলা কমিটি করতে পারেনি। তবে তারা আহবায়ক কমিটির মতই উপজেলায় সক্রিয় ছিলেন। দলের প্রয়োজনে মিছিল, মিটিং করেছেন। সকল নির্বাচনে মাঠে থেকে নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ীও করেছেন।

২০১৭ সালের ৯ জানুয়ারি সাবেক কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলাকে দ্বিখন্ডিত করে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ও লালমাই নামে পৃথক দুইটি উপজেলা গঠিত হয়। এরপর থেকে লালমাই উপজেলায় পৃথক কার্যকরী কমিটি গঠন করতে কাজ শুরু করে উপেজলা সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি। পাশাপাশি মেয়াদ উত্তীর্ণ কয়েকটি ইউনিয়ন কমিটিও সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করা হয়। লালমাই উপজেলার আওয়াতাধীন ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ২টিতে আহবায়ক কমিটি ও ৭টিতে কার্যকরী কমিটি বহাল রয়েছে। এছাড়া ছোট শরীফপুর ডিগ্রী কলেজেও আহবায়ক কমিটি রয়েছে। সবকয়টি কমিটিই মেয়াদ উত্তীর্ণ।

গতবছরের ৭ সেপ্টেম্বর বাগমারা বাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অর্থমন্ত্রীর বড় ভাই এম এ হামিদ কে সভাপতি, অর্থমন্ত্রীর পিএস কেএম সিংহ রতন কে সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহবায়ক মো: আয়াত উল্যাহ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠিত হয়।

সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহবায়ক আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে চলে যাওয়ায় ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের দাবি আরো জোরালো হয়। দাবি অনুযায়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ছাত্রলীগ নেতা আকতার হোসেন পারভেজ ও কামরুল হাসান ভুট্টুকে শীর্ষ পদ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে সিভি গ্রহণের দায়িত্ব দেন।

সেঅনুযায়ী সভাপতি পদে বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল হান্নান মিয়াজীসহ ৩জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১১জন সিভি জমা দেন। কিন্তু দীর্ঘ ১১ মাসেও কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় কোন অগ্রগতি হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের একাধিক কর্মী জানান, ছাত্র রাজনীতি করে আমরা বেশি কিছু চাই না। অন্তত নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী দলের পদ প্রত্যাশা করি। কিন্তু লালমাইয়ে ছাত্রলীগের পদের অপেক্ষা করতে করতে অনেক নেতার বিয়ের বয়সও শেষ হয়ে গেছে। সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্তেও কেউই সরকারি চাকরিতে যোগদানের সুযোগ পায়নি।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন রুবেল বলেন, লালমাই উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। পদ প্রত্যাশিরা সিভিও জমা দিয়েছে। কিন্তু করোনার কারনে সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। যতদ্রুত সম্ভব লালমাইতে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কাঠামো সবাই দেখতে পাবে।

অর্থমন্ত্রীর এপিএস ও লালমাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কেএম সিংহ রতন বলেন, করোনা শিথিল হলে অর্থমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশক্রমে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।